আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ | আয়াতুল কুরসি পড়ার ফজিলতঃ
আয়াতুল কুরসি (আরবি: آية الكرسي আয়াত আল-কুরসি, অর্থ: "সিংহাসনের স্তবক") হচ্ছে কুরআনের দ্বিতীয় সূরা আল-বাকারার ২৫৫তম আয়াত (২:২৫৫)। এই আয়াতে সমগ্র মহাবিশ্বের উপর আল্লাহর পূর্ণ ক্ষমতা ঘোষণা করা হয়েছে- ।
আয়াতুল কুরসি কুরআন মজীদের সর্ববৃহৎ আয়াত। হাদীসে এ আয়াতের বহু ফযিলত ও বরকত বর্ণিত হয়েছে। মুসনাদে আহমদ গ্রন্থে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়াতুল কুরসীকে সবচে উত্তম আয়াত বলে উল্লেখ করেছেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
যে ব্যক্তি ঘরের ভিতরে আয়াতুল কুরসি পড়বে, আল্লাহ তার ঘরকে শয়তান থেকে রক্ষা করবেন।(সহীহ বুখারী)
অন্য এক হাদীসে আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উবাই ইবনে কা’বকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কুরআনের মধ্যে কোন আয়াতটি সবচে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ?
উবাই ইবনে কা’ব আরজ করলেন, তা হচ্ছে আয়াতুল কুরছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা সমর্থন করে বললেন, হে আবুল মানযার! তোমাকে এ উত্তম জ্ঞানের জন্য ধন্যবাদ।
আয়াতুল কুরসির অনেক ফযীলত ও অসংখ্য সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন, এই আয়াত হল কুরআনের অতীব মহান আয়াত। এটা পড়লে রাতে শয়তান থেকে হিফাযতে থাকা যায়। এছাড়া এটি পড়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করলে অনেক সওয়াব ও নেকী হাসিল হয় যা আমরা এই লেখাতে জানবো।
হাদীসে আছে যে,
রাতে ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি ( Ayatul Kursi ) পড়া হলে তার জন্য আল্লাহ তায়ালা একজন ফিরিশতা নিযুক্ত করে করেন। যিনি পুরো রাত তার নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকেন
পবিত্র কুরআনের দ্বিতীয় সূরা আল বাকরার ২৫৫ তম আয়াতটি Ayatul kursi (আয়াতুল কুরসি) নামে নাম ডাকা হয়। আয়াতটি অধিক ফজিলত ও বরকত পূর্ণ। পবিত্র কুরআনের শ্রেষ্ঠতম আয়াত হলো এই আয়াতুল কুরসি।
আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ (রা:) রাসূল (সা:)-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন- হে আল্লাহর রাসূল (সা:)! আপনার প্রতি সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোন আয়াতটি নাজিল হয়েছে? রাসূল (সা:) বলেছিলেন, আয়াতুল কুরসী।
হাদিসের ভাষায় আয়াতুল কুরসি ( Ayatul Kursi ) পাঠের বিশেষ চার ফজিলত বর্ণনা করা হয়ছে-
১. হজরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি নিয়মিত পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশে কেবল মৃত্যুই অন্তরায় থাকে।
২. হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে আয়াতুল কুরসি ( Ayatul Kursi ) পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো বাধা থাকে না। (নাসাঈ)
৩. হজরত উবাই বিন কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উবাই বিন কাবকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমার কাছে কুরআন মাজিদের কোন আয়াতটি সর্বশ্রেষ্ঠ? তিনি বলেছিলেন, (আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লাহু আল্ হাইয়্যুল কাইয়্যুম) তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ হাত তার বুকে রেখে বলেন, আবুল মুনযির! এই ইলমের কারণে তোমাকে ধন্যবাদ। (মুসলিম)
৪. আবু হুরায়রা (রা.) বলেন- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সুরা বাকারার মধ্যে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যে আয়াতটি পুরো কোরআনের নেতাস্বরূপ। তা পড়ে ঘরে প্রবেশ করলে শয়তান বের হয়ে যায়। তা হলো ‘আয়াতুল কুরসি’। (মুসনাদে হাকিম)
আয়াতুল কুরসীর ( Ayatul Kursi ) বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ-
اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-
Ayatul Kursi বাংলা উচ্চারণ- আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম। (সূরা আল-বাক্বারা আয়াত-২৫৫)
Ayatul Kursi অর্থ : আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতিত এমন কে আছে যে, তাঁর নিকটে সুফারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতুটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতিত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলির তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান’।
🟢 উত্তর ▷✅
অবশ্যই, নিচে আয়াতুল কুরসির আরবি উচ্চারণ বাংলায় আরও সহি (সঠিকভাবে তাজবিদ অনুযায়ী যতটা সম্ভব বাংলায় প্রকাশযোগ্য) দেওয়া হলো:
আয়াতুল কুরসির সহি উচ্চারণ (বাংলায়):
🟢 উত্তর ▷✅
আয়াতুল কুরসি (আংশিক) ও অর্থ
আরবি: اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُউচ্চারণ: আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যূম
বাংলা অর্থ: আল্লাহ — তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; তিনি চিরঞ্জীব, সত্ত্বা-অধিকারী, সবকিছুকে ধারণকারী ও রক্ষণকারী।
শব্দভিত্তিক ব্যাখ্যা:
এই বাক্যটি ঈমান ও তাওহিদের সবচেয়ে গভীর ঘোষণা, এবং আয়াতুল কুরসির সূচনা অংশ।
🟢 উত্তরঃ ▷
কুরসি শব্দের অর্থ
কুরসি (قُرْسِيّ): এটি আরবি শব্দ যা "আল্লাহর ক্ষমতা ও সত্ত্বার প্রকাশ" বা "আল্লাহর রাজত্ব ও ক্ষমতার চিহ্ন" বোঝায়। কুরআনে এটি আল্লাহর প্রভুত্ব ও তত্ত্বাবধানের প্রতীক হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে।এই শব্দটি কুরআনে আল্লাহর ব্যাপক ক্ষমতা এবং সৃষ্টির উপর তাঁর সম্পূর্ণ কর্তৃত্বের কথা ব্যক্ত করে। "কুরসি" শুধুমাত্র একটি বস্তু নয়, বরং আল্লাহর রাজত্ব এবং সার্বভৌমত্বের একটি প্রতীক হিসেবে উপস্থিত হয়।
কুরসি এর আরও অর্থ: "বসার স্থান" বা "সিংহাসন" হিসেবে বুঝানো হয়, যা পরবর্তী আল্লাহর মহিমা ও রাজত্বের বিশালতা প্রকাশ করে।
🟢 উত্তর ▷✅
আরশ শব্দের অর্থ
আরশ (عرش): আরবি শব্দ "আরশ" যা মূলত সিংহাসন বা রাজকীয় আসন হিসেবে বোঝানো হয়। ইসলামে এটি আল্লাহর সর্বোচ্চ ক্ষমতার স্থান এবং তাঁর রাজত্বের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কুরআনে: আল্লাহ নিজেকে "আরশের উপরে বসবাসকারী" হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যা তাঁর মহান ক্ষমতা এবং গৌরব প্রকাশ করে। এটি আল্লাহর অদ্বিতীয় কর্তৃত্ব এবং সৃষ্টির শীর্ষ স্থানকে নির্দেশ করে।আরশের আরও কিছু বৈশিষ্ট্য:
আরশ কুরআনে এবং হাদীসে আল্লাহর রাজত্বের পরিপূর্ণতার প্রতীক হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে।
🟢 উত্তরঃ ▷✅
কুরআনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আয়াত
আয়াতুল কুরসি
আয়াতুল কুরসি কুরআনের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এবং শক্তিশালী আয়াত হিসেবে পরিচিত। এটি সূরা আল-বাকারাহ (আয়াত ২৫৫) তে রয়েছে এবং এটি আল্লাহর অশেষ ক্ষমতা, প্রভুত্ব এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক।
আয়াতুল কুরসির অর্থ:
আরবি: اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ উচ্চারণ: আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ূম বাংলা অর্থ: আল্লাহ — তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; তিনি চিরঞ্জীব, সত্ত্বা-অধিকারী, সবকিছুকে ধারণকারী ও রক্ষণকারী।আয়াতুল কুরসির ফজিলত:
হাদীস থেকে আয়াতুল কুরসির মর্যাদা:
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আয়াতুল কুরসি কুরআনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ আয়াত।”
(সহীহ বুখারী)
এটির গুরুত্ব:
আয়াতুল কুরসি, আল্লাহর ক্ষমতা ও প্রভুত্বের সবচেয়ে বড় প্রমাণ, এবং এটি ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়াতটি আমাদেরকে আল্লাহর সর্বশক্তি ও সৃষ্টির উপর তাঁর সর্বোচ্চ কর্তৃত্বের সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি দেয়।
✅ আশা করি,
এরকম আরও গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের
"Web Tech Info ব্লগসাইটটি"
Follow দিয়ে রাখুন অথবা হোম পেজটি বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।
👨💻 Admin পরিচিতি
আমি একজন প্রযুক্তি আগ্রহী ব্লগার এবং zakirzone.com এর প্রতিষ্ঠাতা। বাংলায় প্রযুক্তি, অনলাইন ইনকাম, পড়াশোনা, ক্যারিয়ার গঠন, ধর্ম ও জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যবহুল ও সহায়ক কনটেন্ট নিয়মিত শেয়ার করি।
🎯 আমার লক্ষ্য হলো— পাঠকদের উপকারে আসে এমন টিপস, গাইড ও বাস্তবভিত্তিক পোস্ট তৈরি করা।
Empowering lives through knowledge in easy Bangla 💡
(Education and knowledge are the lights that illuminate the world as they spread.)
0 Comments