
কুরআন ও হাদীসের আলোকে রিযিক বৃদ্ধির পরীক্ষিত আমল-
(Rijik Briddhir Dua o Amol)
আমরা সবাই চাই যে আমাদের রিজিক বেড়ে যাক, জীবনে প্রাচুর্য আসুক। সুখ-সফলতা আল্লাহর দান। তিনিই দূর করতে পারেন মানুষের দুঃখ-কষ্ট ও অভাব-অনটন। তাই তার কাছেই দুহাত তুলে চাইতে হবে। মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি অনেক দয়াশীল। তিনি মানুষের প্রতি দয়া করে কিছু আমলের বরকতে রিজিক বাড়িয়ে দেন।
‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন- 'তোমরা যদি কৃতজ্ঞতা আদায় কর তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদেরকে আরও বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অস্বীকার কর তাহলে আমার আজাব অবশ্যই কঠিন।’ -সূরা ইবরাহীম (১৪) : ৭
আলহামদুলিল্লাহ! এসব দোআ আমল করে অসংখ্য মানুষ উপকৃত হয়েছে এবং বরকতপূর্ণ রিযিক লাভ করেছে, এই মর্মে তারা সাক্ষ্য দিয়েছে। আপনিও যদি একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সাথে এই আমলগুলো করতে পারেন, ইনশাআল্লাহ কামিয়াব হবেনই ১০০% নিশ্চিত। আর যদি না হন, তবে বুঝতে হবে-
- আপনার একাগ্রতা ও নিষ্ঠার ঘাটতি বা ত্রুটি আছে।
- মহান রব এর থেকেও অনেক ভালো কিছু আপনার জন্য পরকালে দিবেন। কারণ বান্দার ভালো মন্দ মহান আল্লাহই ভালো জানেন।
পবিত্র কোরআনুল কারিম ও হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বহু আমল বর্ণিত হয়েছে। এই আমল গুলো যে নিয়মিত করবে, আল্লাহ পাক যদি চান তাহলে দ্রুত সে ধনী হবে, রিজিকে বরকত হবে, তার সম্পদ বৃদ্ধি পাবে অভাব অনটন দূর হবে ইনশাআল্লাহ্।
"রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন:আরও পড়ুন : ক্ষমা প্রার্থনা বা তওবার শ্রেষ্ঠ দোয়া সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ । Sayyidul Istighfar|
‘যদি তোমরা আল্লাহর ওপর সত্যিকারের ভরসা রাখো, তবে তিনি তোমাদের রিজিক এমনভাবে দেবেন, যেমন তিনি প্রতিদিন ক্ষুধার্ত পাখিগুলোকে রিজিক দেন — যারা সকালবেলা খালি পেটে বাসা ছাড়ে এবং সন্ধ্যায় তৃপ্ত পেটে ফিরে আসে।’
✅ পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির আমল গুলো নিম্নে দেওয়া হলঃ
🟢 ১. রিজিক বৃদ্ধির দোয়া- তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করা
খোদাভীতি ও আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা স্থাপন রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ইরশাদ হয়েছে,
‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন। এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তার উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ২-৩)
একজন সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে। (অর্থাৎ আমি চরমভাবে অভাবগ্রস্থ)
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, ‘তোমার কি ঐ তাসবীহ স্মরণ নেই, যে তাসবীহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকতে রুজি প্রদান করা হয়। যখন সুবহে সাদিক উদিত (শুরু) হয় তখন এ তাসবীহ ১০০ বার পাঠ কর:
উচ্চারণঃ- সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আযীম, ওয়া বিহামদিহি আস্তাগফিরুল্লাহ।
অর্থঃ- মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তার জন্য; মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি সমুচ্চ, মহান; এবং সকল প্রশংসা তার জন্য, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই।
যদি তুমি ১০০ বার পড়, তাহলে দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে আসবে। (অর্থাৎ তুমি সহজেই স্বচ্ছলতা লাভ করবে।) ঐ সাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু চলে গেলেন। কিছুদিন পর পুনরায় ঐ সাহাবা হাজির হয়ে, আরয করলেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! দুনিয়া আমার নিকট এত বেশি আসছে, আমি হতবাক! কোথায় উঠাব, কোথায় রাখব! (উৎস:- আল খাছায়িছুল কুবরা, ২য় খন্ড, ২৯৯ পৃষ্ঠা)
আরও পড়ুন : কুরআন ও হাদীসের আলোকে অন্তরের প্রশান্তির জন্য মানসিক শান্তি লাভের উপায়!|🟢 ২. ধনী হওয়ার দোয়া ও আমল- পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা
আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করলে ইহকালেই সুফল পাওয়া যায়। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি,
যে ব্যক্তি কামনা করে যে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক, সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৫; মুসলিম, হাদিস : ৪৬৩৯)
🟢 ৩. অভাব মুক্তির দোয়া- তওবা ও ইস্তিগফার করা
মুমিনের জীবনে তওবা ও ইস্তিগফারের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। অধিক পরিমাণে ইস্তিগফার এবং বেশি বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া রিজিক বৃদ্ধির কারণ। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন,
যে ব্যক্তি বেশি বেশি ইস্তিগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস : ৭৬৭৭)
🟢 ৪. আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা
দানে ধন বাড়ে—এটা সর্বজনবিদিত। এ বিষয়ে কোরআনের বক্তব্য এমন—
বলে দাও, ‘নিশ্চয়ই আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো, তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।’ (সুরা : সাবা, আয়াত : ৩৯)
🟢 ৫. রিজিক বাড়ানোর সহজ দোয়া- বারবার হজ-ওমরাহ করা
একের পর এক হজ-ওমরাহ পালনে রিজিক বাড়ে। ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন,
তোমরা একের পর এক হজ ও ওমরাহ করতে থাকো, কেননা তা অভাব ও গুনাহ দূর করে দেয়, যেভাবে কামারের হাপর লোহা, সোনা ও রুপার ময়লা দূর করে দেয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৮১৫)
🟢 ৬. অসহায়ের প্রতি সদয় আচরণ
বিপদ-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো সামাজিক ইবাদত। মোসআব বিন সাদ (রা.) যুদ্ধজয়ের পর মনে মনে কল্পনা করলেন, তিনি বোধ হয় তাঁর বীরত্ব ও শৌর্যবীর্যের কারণে অন্যের চেয়ে বেশি মর্যাদাবান। এমন প্রেক্ষাপটে মহানবী (সা.) তাকে বলেন,
তোমাদের মধ্যে থাকা দুর্বলদের কারণে তোমাদের সাহায্য করা হয় এবং রিজিক প্রদান করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ২৮৯৬)
🟢 ৭. ইবাদতের জন্য নিজেকে ফারেগ করে নেওয়া
আল্লাহর ইবাদতের জন্য নিজেকে ফারেগ করার মাধ্যমে অভাব দূর হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেন,
হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না করো, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব দূর করব না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৬৫৪)আরও পড়ুন : গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করা সহ কাঁচা পেঁপে বহু রোগের মহৌষধ |
🟢 ৮. আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করা
আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে হিজরত তথা স্বদেশ ত্যাগ করলে এর মাধ্যমেও রিজিকে প্রশস্ততা ঘটে। ইরশাদ হয়েছে,
‘আর যে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করবে, সে জমিনে বহু আশ্রয়ের জায়গা ও সচ্ছলতা পাবে। আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের উদ্দেশে মুহাজির হয়ে নিজ ঘর থেকে বের হয় তারপর তাকে মৃত্যু পেয়ে বসে, তাহলে তার প্রতিদান আল্লাহর ওপর অবধারিত হয়। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০০)
🟢 ৯. বিয়ে করা
বিয়ের মাধ্যমে জীবনে বরকত ও প্রাচুর্য নেমে আসে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
‘আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস-দাসীদের বিয়ে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৩২)
🟢 ১০. অভাব থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা
আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ বান্দার হাত ফিরিয়ে দেন না। ইরশাদ হয়েছে,
‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৬০)আরও পড়ুন : সুরা মুলক (Surah Al-Mulk with bangla) বাংলা উচ্চারণ অর্থ ও ফযিলত-
🟢 ১১. গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দীনের ওপর সদা অটল থাকা
গুনাহ ত্যাগ করা, আল্লাহর দীনের ওপর অটল থাকা এবং নেকীর কাজ করা- এসবের মাধ্যমেও রিজিকের রাস্তা প্রশস্ত হয় যেমন পূর্বোক্ত আয়াতগুলো থেকে অনুমান করা যায়। তবে সর্বোপরি আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা দুনিয়াতে চিরদিন থাকার জন্য আসি নি। তাই দুনিয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে উচিত হবে আখিরাতকে অগ্রাধিকার ও প্রাধান্য দেয়া। আমাদের এদেন অবস্থা দেখে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘বরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিচ্ছ। অথচ আখিরাত সর্বোত্তম ও স্থায়ী।’ (সূরা আল-আ‘লা, আয়াত : ১৬-১৭)
আর পরকালের মুক্তি ও চিরশান্তিই যার প্রধান লক্ষ্য তার উচিত হবে রিজিকের জন্য হাহাকার না করে অল্পে তুষ্ট হতে চেষ্টা করা। যেমন : হাদীসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবন আ‘স রাদিআল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘ওই ব্যক্তি প্রকৃত সফল যে ইসলাম গ্রহণ করেছে আর তাকে জীবন ধারণে (অভাবও নয়; বিলাসও নয়) পর্যাপ্ত পরিমাণ রিজিক দেয়া হয়েছে এবং আল্লাহ তাকে যা দিয়েছেন তাতে তুষ্টও করেছেন। (মুসলিম : ২৪৭৩; তিরমিযী : ২৩৪৮; আহমদ : ৬৫৭২)
🟢 ১২. আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা
সাধারণভাবে আল্লাহ যে রিজিক ও নিয়ামতরাজি দান করেছেন তার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া করা এবং তার স্তুতি গাওয়া। কারণ, শুকরিয়ার ফলে নেয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আযাব বড় কঠিন।’ (সূরা ইবরাহীম, আয়াত : ০৭) আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা শুকরিয়ার বদৌলতে নেয়ামত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। আর বলাবাহুল্য আল্লাহর বাড়ানোর কোনো সীমা-পরিসীমা নাই।
মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
🟢 ১৩. সকালবেলা কাজ শুরু করা
সকালবেলা কাজ শুরু করার ফজিলত
দিনের শুরুতে কাজ শুরু করা ইসলামের একটি বরকতময় শিক্ষা। কারো অফিস, ব্যবসা বা অন্যান্য কাজ একটু দেরিতে শুরু হলেও, অন্তত ঘরের কাজ বা ব্যক্তিগত কাজগুলো সকাল সকাল শুরু করা উচিত।
কারণ, সকালবেলার কাজে আল্লাহ তাআলা বরকত রাখেন।
রাসুলুল্লাহ ﷺ এর দোয়া:
اللَّهُمَّ بَارِكْ لِأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا
“হে আল্লাহ! আমার উম্মতের সকালবেলায় বরকত দান করুন।”
(সুনান আত-তিরমিযি)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেছেন:
“আমার উম্মতের জন্য সকালবেলার সময়টাতে বরকত দেয়া হয়েছে।”
সুতরাং, যদি কেউ সকালের সময় ঘুমিয়ে থাকে, তবে সে এই বরকত থেকে বঞ্চিত হবে।
তাই দিনের শুরুতে আল্লাহর নাম নিয়ে কাজ শুরু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমেই জীবনে বরকত, কল্যাণ ও সফলতা আসে।
✅ প্রস্নঃ- আমি দীর্ঘদিন ধরে রোগে আক্রান্ত; আল্লাহের কাছে অনেক দোয়াও করেছি। এখন রোগের কারণে মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েছি! আমাকে কি এমন কিছু কোরআন আর হাদিসের কথা বলবেন, যাতে করে আমি আমার মনকে দৃঢ় করতে পারি?
উত্তরঃ- আপনি নিন্মলিখিত দোয়া নিয়মিত পড়ুন ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহতালা আপনাকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করবেন
দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার দোয়া-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ ضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আউযু বিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউযু বিকা মিন দ্বালা’য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে আপনার আশ্রয় চাই, অপারগতা ও অলসতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই আর ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকেও আপনার আশ্রয় চাই।
মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আপনাকে নেক আমলের জন্য হায়াত ও রিযক -এ বারাকাহ দান করেন এবং সুস্থ্যতা নসীব করেন। আমীন।
✅ প্রস্নঃ- উপকারী জ্ঞান পবিত্র রিজিক ও কবুলযোগ্য আমলের জন্য দোয়া কি ?
উত্তরঃ- হজরত উম্মু সালামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের নামাজের সালাম ফিরিয়ে বলতেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا طَيِّبًا وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিআ ওয়া রিযকান তাইয়্যেবা ওয়া আমালান মুতাক্বাব্বালা।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ্! আমি আপনার কাছে উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিজিক ও এবং কবুল হওয়ার যোগ্য কর্মত
১টি আমল করলেই রিজিক বাড়তেই থাকবে ১০০%!
আয়াত (আরবি):
وَ یٰقَوۡمِ اسۡتَغۡفِرُوۡا رَبَّكُمۡ ثُمَّ تُوۡبُوۡۤا اِلَیۡهِ یُرۡسِلِ السَّمَآءَ عَلَیۡكُمۡ مِّدۡرَارًا وَّ یَزِدۡكُمۡ قُوَّۃً اِلٰی قُوَّتِكُمۡ وَ لَا تَتَوَلَّوۡا مُجۡرِمِیۡنَ ﴿۵۲﴾
বাংলা অনুবাদ (সরল):
“৫২. হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থন কর, তারপর তার দিকেই ফিরে আস। তিনি তোমাদের উপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষাবেন। আর তিনি তোমাদেরকে আরো শক্তি দিয়ে তোমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবেন এবং তোমরা অপরাধী হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিও না।” ( সুরা হুদ, আয়াত ৫২ )
সহজ ও শক্তিশালী আমল (প্রস্তাব):
- প্রতিদিন সকালে/রাতে “আস্তাগফিরুল্লাহ রব্বি মিন কুল্লি যাম্বি ওয়া আতुबু ইলাইহি” (অর্থ: আমি আমার সকল পাপের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর কাছে ফিরে আসছি) কমপক্ষে ১০০ বার বলার চেষ্টা করুন।
- ইস্তিগফারকে অন্তরের অনুশোচনা ও সদিচ্ছার সাথে মিলিয়ে করুন (শুধু জিহ্বার কথা নয়)।
- ইস্তিগফারের সাথে দোয়া, সদকা ও পরিশ্রম চালিয়ে যান — আমল একসাথে থাকলে বরকত বৃদ্ধি পায়।
আমলের প্রত্যাশিত ফল:
রিজিকে বরকত, গৃহস্থালিতে শান্তি, কঠিন সময় থেকে মুক্তির রাস্তা এবং আল্লাহর রহমত বৃদ্ধি — 👉 “এই বিষয়টি কুরআন, হাদিস এবং ইসলামি সাহিত্যেও বর্ণিত হয়েছে।”
দ্রষ্টব্য (সূত্রের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা):
কুরআন-এ-কারিমে নূহ ও হুদসহ একাধিক স্থানে ইস্তিগফারের মাধ্যমে বর্ষা, সন্তান, ধন-সম্পদ ও রিজিক বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে; পাশাপাশি সহিহ হাদিসেও ইস্তিগফারের মাধ্যমে কষ্ট থেকে মুক্তি ও অপ্রত্যাশিত রিজিকের কথা এসেছে।
0 Comments