আমরা সবাই সৌন্দর্যের পূজারী। নারী পুরুষ নির্বিশেষে আমরা নিজেকে সুন্দর দেখাতে পছন্দ করি এবং নিজেদেকে তরুণ দেখতে চাই। আর
যৌবন ধরে রাখতে আদি যুগ থেকেই প্রচলিত ছিলো অনেক মিথ। অবলম্বন করেছে যৌবন ধরে রাখার নানান কৌশল | আজও আমরা যৌবন ধরে রাখতে কত কিছুই না করে থাকি। সকলেই চায় আজীবন যৌবন ধরে রাখতে। কিন্তু বয়স বাড়া টা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাই আপন তারুণ্য ধরে রাখার জাদুকরী উপায় জানুন !
আমরা চাইলেও যেমন সকাল বেলার সুর্য্য কে সারাদিন ধরে রাখতে পারি না , প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মেই সকাল গড়িয়ে দুপুর , বিকেল এবং সন্ধ্যা হয় ঠিক তেমনি ভাবে শৈশব , কৈশোর , যৌবন ও বার্ধক্য জীবনের ক্রম পর্যায়। এই স্বাভাবিকতা কে স্বীকার করে নিয়েই যৌবন ধরে রাখার কৌশল হিসাবে কিছু টিপস ফলো করতে পারেন।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ সাত ব্যক্তিকে তাঁর (আরশের) ছায়ায় স্থান দিবেন; যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। ...(তন্মধ্যে) ঐ যুবক, যার যৌবন অতিবাহিত হয় আল্লাহর ইবাদতে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৬০; সহীহ মুসলিম ১০৩১
এতে বয়স বাড়লেও , বয়স বাড়ার লক্ষণগুলি কিছুটা দেরীতে প্রকাশ পাবে। তাই যৌবন ধরে রাখার কৌশল ও তার টিপস উল্লেখ করা হল:
টিপস:
● জীবনে প্রত্যাশার পরিমাণ কম করুন। অতিরিক্ত প্রত্যাশা হতাশা বাড়ায়। অন্যের দোষত্রুটি না খুঁজে নিজের ব্যপারে উৎসাহী হোন। স্ট্রেসকে হ্যান্ডেল করতে শিখুন। যৌবন ধরে রাখার ব্যাপারে কৌশলী হন।
● আনন্দমূলক কাজ করুন- যদি কোনো সখ বা হবি থাকে সেদিকে মনোযোগ দিন। বা এমন কিছু খুঁজে বার করুন যেগুলি আপনাকে আনন্দ দেয়, আপনি রিলাক্স ফীল করেন।
● যৌবন ধরে রাখতে এলকোহল , তামাক জাতীয় বস্তু ও অত্যধিক ক্যাফেইন থেকে দূরে থাকুন। এগুলো আপনার আয়ু কমিয়ে দেবে। প্যাকেট জাত খাবার ও অত্যধিক নুন, চিনি এড়িয়ে চলুন।
● যৌবন ধরে রাখতে পরিমিত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। পরিমিত ঘুম ক্ষুধামন্দা দূর হবে। দুশ্চিন্তা দূর করে। বিষণ্ণতা কেটে যায়। স্মৃতিশক্তিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। রাতের খাবার হবে হালকা এবং অবশ্যই আট টার মধ্যে ডিনার সেরে ফেলবেন। আপনার দৈহিক ওজন যদি 50 থেকে 70 কে জি র মধ্যে হয় অবশ্যই প্রতিদিন 3 লিটার জল খাবেন।
● বিভিন্ন রকমের বাদাম, টাটকা ফলমূল , শাক সব্জি প্রতিদিনের খাবারে রাখুন। যৌবন ধরে রাখতে খুব বেশী ডেয়ারি ও পোলট্রি প্রডাক্টস না খেলেই ভালো।
● যৌবন ধরে রাখার জন্য কোনো মেডিকেল ইস্যু থাকলে, আগে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে সেটা সারিয়ে নেবেন।
● লাইফে সবসময় খুব সিরিয়াস থাকার প্রয়োজন নেই। মাঝে মাঝে আবেগী হতে দোষ কোথায়? দু:খ পেলে কেঁদে ফেলুন। পাগলামি করুন, বোকার মতো কাজ করুন , জেনে বুঝে ভুল করুন , অন্যদেরকে আপনার উপর হাসার সুযোগ দিন , নিজেও হাসুন। যৌবন ধরে রাখার কৌশল অবলম্বন করুন।
আরো খবর
- ➤ Basic Accounting Equation | হিসাব সমীকরণ | Debit-Credit নির্নয়ের সূত্র:
- ➤ ডঃ শিবশক্তি স্বরূপজীর বদলে যাওয়া জীবনের ঈর্ষণীয় উপাখ্যান |
- ➤SEO Tutorial Bangla [Step-By-Step] Guide- 2024- এসইও শিখো ! ক্যারিয়ার গড়ো
- ➤ Make Money Online from Home | অনলাইনে টাকা আয় করার সেরা উপায়-
আবার সুস্থ্য থাকতে এবং যৌবন ধরে রাখতে আমরা হরেক রকম ওষুধ সেবন করি।
থানকুনি: আমাদের অতিপরিচিত পাতা। পুকুরপাড় বা জলাশয়ে হামেশাই দেখা মেলে।
১. পেটের রোগ নির্মূল করতে থানকুনির বিকল্প নেই। নিয়মিত খেলে যে কোনও পেটের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। একই সঙ্গে পেট নিয়ে কোনও দিনও সমস্যায় ভুগতে হয় না।
২. শুধু পেটই নয়, আলসার, এগজিমা, হাঁপানি-সহ নানা চর্মরোগ সেরে যায় থানকুনি পাতা খেলে। ত্বকেও জেল্লা বাড়ে।
৩. থানকুনি পাতায় থাকেমস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে ও রক্ত চলাচল বাড়ায়। থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
৪. থানকুনি স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।
৫. মৃতকোষের ফলে চামড়ায় অনেক সময়ই শুষ্ক ছাল ওঠে। রুক্ষ হয়ে যায়। থানকুনি পাতার রস মৃতকোষগুলিকে পুনর্গঠন করে ত্বক মসৃণ করে দেয়।
৬. পুরনো ক্ষত কোনও ওষুধেই না সারলে, থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে তার জল লাগালে সেরে যায়। সদ্য ক্ষতে থানকুনি পাতা বেটে লাগালে, ক্ষত নিরাময় হয়ে যায়।
৭. থানকুনি পাতা চুল পড়া আটকে দেয়। এমনকি নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।
৮. বয়স বাড়লেও, যৌবন ধরে রেখে দেয় থানকুনি পাতার রস। প্রতিদিন একগ্লাস দুধে ৫-৬ চা চামচ থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে, চেহারায় লাবণ্য চলে আসে। আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়।
৯. দাঁতের রোগ সারাতেও থানকুনির জুড়ি মেলা ভার। মাড়ি থেকে রক্ত পড়লে বা দাঁতে ব্যথা করলে একটা বড় বাটিতে থানকুনি পাতা সিদ্ধ করে, তারপর ছেঁকে নিয়ে সেই জল দিয়ে কুলকুচি করলে উপকার চটজলদি পাওয়া যায়।
|আরো খবর
সামুদ্রিক মাছ: সামদ্রিক মাছ যৌবন ধরে রাখতে সহায়ক। দীর্ঘ দিন যৌবন ধরে রাখতে চাইলে নিয়মিত খাবার তালিকায় লাল মাংস বাদ দিয়ে সামুদ্রিক মাছ রাখুন। তাতে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে এবং যৌবন ধরে রাখা যাবে বহুদিন।
অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল একটি উপকারী তেল যা যৌবন ধরে রাখার জন্য সহায়ক। খাবার রান্নার সময় অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে শরীরে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমান কম থাকে এবং সহজে মেদ জমে না। এছাড়াও প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে ত্বকে অলিভ অয়েল ম্যাসাজ করে ঘুমালে ত্বকে বলিরেখা পরে না সহজে। ফলে দীর্ঘ দিন যৌবন ধরে রাখা যায়।
গাজর ও টমেটো: গাজর ও টমেটো ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে যৌবন ধরে রাখার ক্ষেত্রে এই দুটি সবজির জুড়ি নেই। এগুলোতে প্রচুর পরিমানে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। এছাড়াও এতে আছে বিটা ক্যারোটিন ও লুটেইন যা শরীরের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করতে সহায়তা করে।
ডার্ক চকলেট: অনেকেই চকলেট ভালোবাসেন। যারা চকলেট ভালোবাসেন তাদের জন্য ভালো খবর হলো ডার্ক চকলেট বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং চেহারায় তারুণ্যভাব বজায় থাকে। ডার্ক চকলেটে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে। তাই যারা নিয়মিত প্রতিদিন ছোট এক টুকরা ডার্ক চকলেট খান তারা দীর্ঘদিন যৌবন ধরে রাখতে পারেন।
আঙ্গুর: বয়স বা তারুণ্য ধরে রাখতে আঙ্গুরের জুড়ি নেই। আঙ্গুরে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে। ফলে নিয়মিত আঙ্গুর খেলে ত্বক ও দেহ সুন্দর ও সুস্থ থাকে।
ব্রকলি: ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা বয়সজনিত বিভিন্ন অসুখ থেকে দেহকে রক্ষা করে এবং শরীরের বুড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে ফেলে যা আপনার তারুণ্যকে অটুট রাখে।
টক দই: তারুণ্য ধরে রাখতে টক দইয়ের জুড়ি নেই- টক দই মেদ ও কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। দইয়ে প্রচুর প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম আছে যা শরীরের গঠন ভালো রাখে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
পালং শাক: পালং শাকে আছে প্রচুর পরিমানে লুটেইন যা শরীরের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে এবং যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত পালং শাক খেলে ত্বক চোখের বয়সজনিত সমস্যা কমে যায়। এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন আছে বলে পালং শাক শরীরের নানা অসুবিধা দূর করে এবং যোগান দেয় শরীরে পুষ্টি ও শক্তির যা তারুণ্য ভাব অটুট থাকে ।
ডিম: যৌবন ধরে রাখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হল, ডিম। তা সে সিদ্ধ হোক কিংবা ভাজা। সব ভাবেই ডিম শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে- ১০ বছর এবং ১৯ বছর বয়সের মাঝামাঝি সময়টাকে কৈশোর বলে। এর যে কোন এ সময়ে বয়ঃসন্ধিকাল আসতে পারে। এটা মূলত কৈশোর ও যৌবনের মধ্যবর্তী পর্যায়। অনেক সময় ১৯ বছরের পরও বয়ঃসন্ধির ব্যাপ্তি থাকতে পারে।
যৌবন কালের কাজের গুরুত্ব কত বেশি তা এ হাদিস ও সুসংবাদ থেকেই প্রমাণিত–
وعدّ صلى الله عليه وسلم في السبعة الذين يظلهم الله في ظله يوم لا ظل إلا ظله: « شابا نشأ في عبادة الله”.
আর যে যুবক তার যৌবনকে আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়ে দেয়; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সম্পর্কে বলেছেন, কেয়ামতের দিন; যেদিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না; আল্লাহ তাআলা তাকে (আরশের) স্বীয় ছায়ার তলে আশ্রয় দেবেন।’ ( সুবহানাল্লাহ ! )
0 Comments