![শিশুর আদর-যত্ন- ছবি- আব্দুর রহমান আইয়ান শিশুর আদর-যত্ন](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhzrfbfztP1FMV2nGSBBMkXA_0mDTJZd7L65sXjWbvQDi_CObVsURYQ25P00W45WjAskWs1LO495tF4urjcyN9HoLDndS8eHFaIW65h2WgG38BhQwZaiBL3IddHgfTyKt2MXegILu3UFCKBBcFeJDkinSlIkWTTeu4lOVM5LuqLO9FAL9drzE2D_wCoS515/s320-rw/%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%B0%20%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%B0-%E0%A6%AF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A8%20%28%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A7%A7%29.jpg)
একটি শিশু বড় হলে কেমন হবে তার ভিত্তি তৈরির জন্য তিন থেকে ছয় বছর বয়স খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওরা দরকার অদরকার বোঝে না। চাই মানে চাই ই ! কিছু বাচ্চা এত আবদার করে যে তার জন্য সে যা খুশী করতে পারে।
তাই, যে সব শিশু আদর-যত্নে নতুন নতুন খেলনা দিয়ে ভরা থাকে, দেখা গিয়েছে তারা আনন্দে থাকে, তাদের মন থাকে চনমনে। কিন্তু যেসব শিশুদের আপনি সব কাজে বাঁধা দেন, এড়িয়ে চলেন, তারা বেড়ে ওঠে হতাশায়, হয় খুব খিটখিটে, দিশেহারা, তারা সহজে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
একটি শিশু প্রথম তিন মাসে প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ গ্রাম করে ওজন বাড়ে। পরবর্তী মাসগুলোতে আরেকটু কম হারে ওজন বাড়তে থাকে, ৩-১২ মাস বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ৪০ গ্রাম ওজন বাড়ে। ৬ মাস বয়সে শিশুর ওজন জন্মের সময়ের ওজনের দ্বিগুণ হয়, এক বছরে ৩ গুণ, দুই বছরে ৪ গুণ, তিন বছরে ৫ গুণ, পাঁচ বছরে ৬ গুণ হয়।
এই সময়ে বয়সের সঙ্গে শিশুর ওজন আর উচ্চতা ঠিক আছে কি না, সেটা খেয়াল রাখার পাশাপাশি শিশুকে যেমনি আদর-যত্নে বড় করে তুলতে হয়, তেমনই তার মনেরও খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি। শিশুমন অত্যন্ত নরম। সেখানে কোনও ভাবে আঘাত লাগলে তা ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই শিশুকে কী বলবেন, কী ভাবে বলবেন, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করা জরুরি বৈকি।
অনেক সময় ছোট ছেলে-মেয়েরা অনেক কিছুর জন্য বায়না করে, যা তাদের তখনই দেওয়া সম্ভব হয় না। এই সব ক্ষেত্রে সরাসরি 'না' বলবেন না। যে কোনওরকম নেগেটিভ শব্দ শিশুমনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। সরাসরি 'না' না বলে আর যে ভাবে শিশুর মনকে অন্যদিকে ঘোরাতে পারবেন, তা দেখে নিন।
যদি আপনার মনে হয় যে আপনার শিশু যা চাইছে তা তাকে দেওয়া যেতেই পারে তবে এখনই নয়, তাহলে তাকে বলুন, 'হ্যাঁ তুমি এটা পাবে তবে পরে'। যেমন, 'আগে স্কুলের ব্যাগ গুছিয়ে নাও, তারপরে ক্যান্ডি পাবে।' তাই শিশুর আদর-যত্নের ব্যাপারে একটু সচেতন হন ।
অনেক সময় ছোট ছেলে-মেয়েরা খুব জেদি হয়ে যায়। তারা যেটা চাইছে, তখনই না পেলে কান্নাকাটি শুরু করে। চাই মানে চাই ই ! তাদের তখন 'না' না বলে বরং তাদের মন অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন। অন্য কথা বলে বা অন্য কিছু দেখিয়ে তাদের মন অন্যদিকে ব্যস্ত করে দিন। সুতরাং শিশুর আদর-যত্নের ব্যাপারে একটু কৌশলী হওয়া প্রয়োজন ।
অনেক সময় ছোট ছেলেমেয়েরা ছুরি-কাঁচি বা অন্য কোনও বিপজ্জনক বস্তু নিয়ে খেলার বায়না করে। সেক্ষেত্রে তাদের অন্য কোনও খেলনা দিয়ে ভোলানো চেষ্টা করুন। তাদের বলুন যে ছুরি-কাঁচি না নিয়ে তুমি বরং এটা নিয়ে খেলো ! । সেই খেলায় আপনিও তার সঙ্গে যোগ দিন। খেলা জমে উঠলে বায়না ভুলতে শিশুর সময় লাগবে না। অতএব শিশুর আদর-যত্নের পাশাপাশি এদিকটাতেও সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখুন ।
প্রত্যেক বাবা মায়ের শিশুর আবেগ পড়তে শেখা উচিত । ১ থেকে ৩ বছরের শিশুরা সহজেই তাদের আবেগ দেখাতে পারে। আপনার কাজ তাকে লক্ষ্য রাখা।
আপনি আপনার শিশুকে নতুন কিছু করতে উৎসাহ দিন, আপনি তার কাজে সহযোগিতা করুন। এবং তাকে শেখান ধৈর্যের সঙ্গে কীভাবে কোনও কাজ করতে হয়। তা আপনি আপনার শিশুকে আদর-যত্নের সহিত শেখাতে পারেন ।
মাঝে মধ্যে তাকে ছোট ছোট উপহার দিন, তাহলে দেখবেন সে খুশি এবং উৎসাহ পাবে । এটিও আপনার শিশুর আদর-যত্নে সহায়ক হিসাবে কাজ করবে ।
শিশুর আদর-যত্নের পাশাপাশি বাবা মার দুজনেরই উচিত শিশুর আবেগ চিনে নেওয়া। কখন সে কাঁদছে, বা কোন কোন সময় কীসের অভাবে তা মধ্যে বিরক্তি তৈরি হচ্ছে দেখুন। তাদের নিজের আবেগকে নিজে চিনে নিতে দিন, দেখবেন ধীরে ধীরে তার রাগ কমছে।
0 Comments