Latest Post:👉
Loading......Wait...... Please..........

কুরআন ও হাদীসের আলোকে অন্তরের প্রশান্তির জন্য মানসিক শান্তি লাভের উপায় !

কুরআন ও হাদীসের আলোকে অন্তরের প্রশান্তির জন্য মানসিক শান্তি লাভের উপায়! ।

 প্রশান্তি লাভের পবিত্র অনুভূতি-

কুরআন ও হাদীসের আলোকে মানসিক শান্তির জন্য প্রশান্তি লাভের উপায় |  Manosik prosanti laver upay

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) এর সূত্রে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, তিনটি বিষয় মানুষকে মুক্তি দেয়। এক. আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করা নির্জনে ও লোকসমাগমে (বা প্রকাশ্যে ও গোপনে)। দুই. কেউ সন্তুষ্ট বা রেগে গেলেও সামনে সত্য কথা বলে দেয়া। তিন. দারিদ্রতা ও স্বচ্ছলতা উভয় অবস্থায় মধ্যমপন্থায় খরচ করা। আর তিনটি বিষয় মানুষকে ধ্বংস করে। 

এক.  নফসের খায়েশাতের অনুসরণ করা। 
দুই.   কৃপণতাকে প্রশ্রয় দিয়ে জীবন যাপন করা।
তিন.  আত্মগরিমা ও অহংকার রোগে ভোগা। এই তৃতীয়টি এগুলোর মাঝে সবচেয়ে ক্ষতিকর।   (বাইহাকি শুয়াবুল ইমান)

মুসনাদে আহমদ ও বাইহাকির অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, ‘চারটি গুণ হাসিল করতে পারলে সারা দুনিয়া ছুটে গেলেও কোন সমস্যা নেই। 

এক.  আমানতের হেফাজত করা। 


দুই.  সত্য কথা বলা। 


তিনি.  সুন্দর চরিত্র। 


চার.  জীবিকা অর্জনে সতর্কতা।’ 



অনেকগুলো গুণের কথা বলা হলেও সবের মূলে রয়েছে একটি। তা হচ্ছে তাকওয়া।

তাকওয়ার পরিচয়
তাকওয়া আরবি শব্দ। বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে ভয় করা, বেঁচে থাকা ইত্যাদি। তাকওয়ার পরিচয় বিভিন্নভাবে দেয়া হয়েছে। তবে সবচেয়ে উত্তম পরিচয় দিয়েছেন হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) যখন হজরত উমর (রা.) তাকে তাকওয়ার পরিচয় সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন। হজরত উমর (রা.) তাকে প্রশ্ন করেছিলেন তাকওয়া কী? হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আমীরুল মুমিনীন! আপনি কখনো এমন রাস্তা দিয়ে গিয়েছেন যা কাটায় পরিপূর্ণ? হজরত উমর (রা.) বলেন, কয়েক বার গিয়েছি। হজরত উবাই ইবনে কাব বলেন, ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আপনি কেমন করতেন? হজরত উমর (রা.) বলেন, কাপড় গুটিয়ে খুব সতর্কতার সঙ্গে যেতাম। তখন হজরত উবাই ইবনে কাব বলেন, ব্যস, এর নামই হচ্ছে তাকওয়া। এই দুনিয়া হচ্ছে কন্টাকাকীর্ণ পথ। 


গুনাহের কাটায় এটা ভরপুর। তাই এখানে এরকমভাবে চলা যেন গুনাহের কাটা দ্বারা ক্ষতবিক্ষত না হয়। আর এর নামই হচ্ছে তাকওয়া। দুনিয়াতে এটাই সবচেয়ে দামি বস্তু।’ হজরত আবু দারদা (রা.) বলেন, মানুষ জাগতিক ভোগবিলাসিতা ও সম্পদের পেছনে পড়ে থাকে। অথচ দুনিয়ার বুকে সবচেয় দামি বস্তু তাকওয়া। (মাআরেফুল কোরআন, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৪২) 


তাকওয়ার স্তর
যে ব্যক্তি তাকওয়া অর্জন করে তাকে বলা হয় মুত্তাকী। কারণ, মুত্তাকী আখেরাতের ক্ষতিকর, কষ্টদায়ক বিষয় থেকে নিজেকে রক্ষা করে চলে। মুত্তাকি লোকদের তিনটি স্তর রয়েছে-


এক.  শুধু কুফুর ও শিরক হতে নিজেকে রক্ষা করে চলা। এটা তাকওয়ার সর্বনিম্ন পর্যায়।

দুই.  কুফুর ও শিরক থেকে বেঁচে থাকার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য কবিরা গুনাহ থেকেও নিজেকে রক্ষা করা এটা তাকওয়ার দ্বিতীয় স্তর।


তিন.  কিন্তু সর্বোচ্চ পর্যায়ের মুত্তাকি হচ্ছেন ওই ব্যক্তি যে শুধু কুফুর, শিরক ও অন্যান্য গুনাহ থেকেই নিজেকে পবিত্র রাখে না বরং শরীয়ত যেগুলোকে অনর্থক কাজ সাব্যস্ত করেছে সেগুলো থেকেও নিজেকে রক্ষা করে চলে। প্রকৃত অর্থে তারাই মুত্তাকি। আল কোরআনে মুমেনকে এই পর্যায়ের তাকওয়া হাসিল করে দুনিয়া থেকে যেতে বলেছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো যথাযথ ভয়। আর তোমরা দুনিয়া থেকে যেয়ো না খাঁটি মুমিন হওয়া ছাড়া। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং-১০২) 


হজরত শাহর ইবনে হাওশাব (রা.) বলেন, ‘মুত্তাকি ওই ব্যক্তি যে হারাম ও গুনাহের কাজে লিপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ওই সব কাজও ছেড়ে দেয়, যাতে শরীয়তের দৃষ্টিতে তেমন কোনো ঝুঁকি নেই (কিন্তু বৈধ বা অবৈধ হওয়ার ব্যাপারে সংশয় থাকে)। (তাফসিরে মাজহারি, খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৮)


এই প্রসঙ্গে সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, হজরত নুমান ইবনে ইবনে বশীর (রা.) এর সূত্রে নবী করিম (সা.) বলেন, হালাল ও হারাম সুস্পষ্ট। এ’দুয়ের মাঝে অনেক বিষয় রয়েছে যা সংশয়পূর্ণ এবং অধিকাংশ মানুষের এব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা নেই।



অতএব যে ব্যক্তি সংশয়পূর্ণ এসব বিষয় থেকে বেঁচে থাকবে সে নিজের দ্বীনদারিকে পবিত্র রাখতে পারবে। যে সংশয়পূর্ণ বিষয়গুলো করবে সে হারামে লিপ্ত হবে। যেমন কোনো রাখাল নিষিদ্ধ ভূমির আশাপাশে ছাগল চড়ালে আশঙ্কা থাকে যে, তার ছাগল অচিরেই ওই নিষিদ্ধ ভূমিতে ঢুকে যাবে। শোন! শোন! জমীনের বুকে আল্লাহর নিষিদ্ধ ভূমি হচ্ছে তার হারাম বিধিবিধানগুলো।’ তারপর রাসুল (সা.) বলেন, প্রত্যেকের দেহে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে ওই অঙ্গটি ঠিক হয়ে গেলে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। আর এর নাম হচ্ছে কলব।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২০৫১)


তবরানি শরীফের এক হাদিসে এসেছে হালাল, হারাম সুস্পষ্ট। আর যা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয় তুমি তা ছেড়ে ওই বস্তু গ্রহণ করো যেখানে কোন সন্দেহ নেই।’


তাকওয়ার উপকারিতা
তাকওয়া এমন গুণ যার দ্বারা মানুষের ভেতরে প্রশান্তি লাভ হয়। আল্লাহ তায়ালার বন্ধুত্ব হাসিল হয়। আল কোরআনে এসেছে, আল্লাহ তায়ালার বন্ধু কেবল মুত্তাকী লোকেরাই।’ রিজিকের সংকীর্ণতা দূর হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে আল্লাহর ভয় অর্জন করবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য বের হওয়ার রাস্তা করে দিবেন এবং এমন জায়গা থেকে রিজিক দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারেনি।’ দুনিয়ার জীবনে মানুষের ভালোবাসা লাভ হয়।


তাকওয়া অর্জনের উপায়

এক. আল্লাহওয়ালা বান্দাদের সংশ্রব লাভ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা তাকওয়া অর্জন করো এবং নেককার লোকদের সঙ্গী হও।’ (সূরা তাওবা-১১৯)

দুই.  সততা ও সত্য কথা বলা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা তাকওয়া অর্জন করো এবং সত্য কথা বলো।’ (সূরা আহযাব-৭০) উল্লেখিত উভয় আয়াতে তাকওয়া অর্জনের নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে দুটি বিষয়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মূলত এগুলো হচ্ছে তাকওয়া অর্জনের সহায়ক। আল্লাহ আমাদেরকে তাকওয়া অর্জনের তাওফিক দান করুন।

বিশিষ্ট সাহাবী হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা সাত ধরনের ব্যক্তিকে তার আরশের ছায়া দ্বারা আচ্ছাদিত করবেন যেদিন ওই ছায়া ব্যতীত আর কোনো ছায়া থাকবে না। 

১.  ন্যায়পরায়ণ শাসক, 
২.  ওই যুবক যে আল্লাহতায়ালার ইবাদতে বেড়ে ওঠে, 
৩.  এমন ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহতায়ালাকে স্মরণ করে এবং তার নয়নযুগল অশ্রুসিক্ত হয়,
৪.  ওই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে ঝুলন্ত থাকে, 
৫.  এমন দুই ব্যক্তি যারা একে অন্যকে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় ভালোবাসে,
৬.  এমন ব্যক্তি যাকে কোনো প্রভাবশালী সুন্দরী নারী কুপ্রস্তাব দেয় আর সে উত্তরে বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি, 
৭.  ওই ব্যক্তি যে নিজের দানকে এমনভাবে গোপন করে যে তার বাঁ হাত জানতে পারে না ডান হাত দ্বারা কী দান করল।

-সহিহ বোখারি, ষষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা. ২৪৯৬, হাদিস নম্বর ৬৪২১



🟢  “আল্লাহর পথে একটি সকাল কিংবা একটি সন্ধ্যা ব্যয় করা গোটা পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের চেয়ে উত্তম। ”
 – বুখারী



আলোচ্য হাদিসে কিয়ামতের দিনের ভয়াবহ সময়ে যখন মানুষ দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করবে একটু ছায়ার সন্ধানে তখন উপরোক্ত বিশেষণে বিশেষিত ব্যক্তিবর্গ আল্লাহতায়ালার বিশেষ কৃপা লাভ করবেন এবং তার ছায়াতলে আশ্রয় পাবেন। এখানে আল্লাহর ছায়া দ্বারা কারো কারো মতে আল্লাহতায়ালার বিশেষ তত্ত্বাবধান ও সুরক্ষাদানকে বুঝানো হয়েছে। অধিকাংশ মুহাদ্দিসের (হাদিস বিশারদ) মতে আরশের ছায়াকে বুঝানো হয়েছে যা অন্য সূত্রে বর্ণিত হাদিস দ্বারা সমর্থিত। হাদিসে বর্ণিত সাত ব্যক্তির বর্ণনা নিম্নে সবিস্তারে উল্লেখ করা হলো—

১. ন্যায়পরায়ণ শাসক। প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.)-এর মতে এখানে শাসক দ্বারা কোনো দেশ বা এলাকার নির্বাহী প্রধানকে বুঝানো হয়েছে। তবে মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত যে সব লোক ন্যায়ানুগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে তাদের ক্ষেত্রেও উক্ত বিধান প্রযোজ্য হবে। ন্যায়পরায়ণতা বলতে প্রত্যেককে তার প্রাপ্য অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে আল্লাহতায়ালার বিধান অনুসরণ করাকে বুঝানো হয়েছে। ন্যায়ের বিপরীত হলো অত্যাচার, অনাচার। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘আর যখন তোমরা মানুষের মাঝে বিচার করবে ন্যায়পরায়ণতার সাথে করবে। ’ -সূরা আন নিসা : ৫৮

২. যে যুবক আল্লাহতায়ালার ইবাদতের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠে। এখানে যুবককে বিশেষিত করা হয়েছে এ কারণে যে, যৌবনকালে মানুষ প্রবৃত্তি দ্বারা বেশি তাড়িত হয়ে থাকে। তাই প্রবৃত্তিকে দমন করে আল্লাহভীতিকে প্রাধান্য দিয়ে যে যুবক আল্লাহর ইবাদতে আত্মনিয়োগ করে তার জন্য এই মহা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

৩. যে ব্যক্তির অন্তর মসজিদের সাথে ঝুলন্ত থাকে। অর্থাৎ মসজিদের বাইরে অবস্থান করলেও মসজিদের সাথে মন লেগে থাকে এবং অপেক্ষায় থাকে আবার কখন মসজিদে প্রবেশ করবে। কেউ কেউ এর দ্বার নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায়ের গুরুত্বের কথা বলেছেন।

৪. এমন দুই ব্যক্তি যারা একে অন্যকে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের আশায় ভালোবাসে। উল্লেখ্য যে, এই ভালোবাসা বাহ্যিকভাবে হলে হবে না বরং তা প্রকৃতপক্ষেই ভালোবাসা হতে হবে। দু’জনে একত্রে থাকুক বা আলাদা থাকুক এই ভালোবাসায় কোনো ঘাটতি হবে না। আমাদের পূর্ববর্তীদের মাঝে এমন ভালোবাসার বহু নজির রয়েছে। ৮ম হিজরিতে সংঘটিত মুতার যুদ্ধের সেই তিন যোদ্ধার কাহিনী তো এ বিষয়ে বেশ প্রসিদ্ধ। যারা পিপাসার্ত অবস্থায় হাতের নাগালে পানি পেয়েও অন্য ভাইয়ের জন্য উৎসর্গ করেছেন এবং শাহাদতের অমিয় সুধা পান করেছেন। বস্তুত এটাই মুসলমানদের ভ্রাতৃত্বের মূর্তপ্রতীক। অন্য এক হাদিসে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা এবং আল্লাহর জন্য শত্রুতা পোষণ করাকে ঈমানের অংশ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই ভালোবাসায় দুনিয়াবি কোনো স্বার্থ থাকতে পারবে না।

৫. যে ব্যক্তি লৌকিকতা পরিহার করে নির্জনে আল্লাহতায়ালাকে স্মরণ করে। সেটা মুখে হোক বা অন্তরে হোক। সেই স্মরণে সাথে সাথে তার দু’নয়ন অশ্রুসিক্ত হয়, সে থাকে সর্বদা আল্লাহর ভয়ে ভীত। এছাড়া সকল মানুষ যখন নিদ্রায় মগ্ন থাকে তখন নির্জনে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকাকে জান্নাত লাভের অন্যতম পাথেয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে অন্য আরেক হাদিসে।

৬. এমন ব্যক্তি যাকে কোনো সুন্দরী, বংশীয় ও প্রভাবশালী নারী ব্যভিচারের দিকে আহবান করে তখন সে বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি। অর্থাৎ আল্লাহতায়ালার ভয়ে ওই নারীর আহবানকে প্রত্যাখ্যান করে যদিও তাতে কোনো দুনিয়ার শাস্তির আশঙ্কা থাকে। আল্লাহর নবী হজরত ইউসুফ (আ.) মিসরের সম্রাট পত্নী জোলায়খার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে জেলখানাকে উত্তম বাসস্থান হিসেবে গ্রহণ করেছেন যা পবিত্র কোরআনের সূরা ইউসুফে বর্ণনা করা হয়েছে।

৭. এমন ব্যক্তি যিনি তার দানকে এমনভাবে গোপন রাখেন যেন ডান হাত কী দান করল বাম হাত জানতে পারল না। এখানে বাহ্যিকভাবে সকল প্রকার দানকে বুঝানো হলেও আল্লামা নববী (রহ.) বলেছেন, ফরজ দান গোপনে করার চাইতে প্রকাশ্যে করাই উত্তম। ইবনে মালেক বলেন, এই গোপনীয়তা নফল দানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, কারণ জাকাত প্রকাশ্যে দেওয়া উত্তম।

উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত হাদিসে কিয়ামত দিবসে আরশের নিচে ছায়া প্রাপ্য যে সাত শ্রেণির লোকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাতেই সীমাবদ্ধ নয়। হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) গবেষণা করে আরো অনেক বৈশিষ্ট্যের সন্ধান পেয়েছেন যেগুলো আরশের নিচে ছায়াপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে এবং এ বিষয়ে তিনি স্বতন্ত্র গ্রন্থও রচনা করেছেন। এতে বুঝা গেল যে, উপরোক্ত হাদিসের সাত সংখ্যাটি মুখ্য নয়।

উপরোক্ত হাদিসের আলোকে নিম্ন বিষয়গুলো মানবজাতির জন্য শিক্ষণীয়-
ক. ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রসহ সকল পর্যায়ে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করা। এর বিপরীতে অন্যায়, অনাচার, অত্যাচারের মতো বিষয় থেকে বেঁচে থাকা। কারণ এগুলো জঘন্য অপরাধ এবং পরকালে এ জন্য কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।

খ. ইবাদত জীবনের সকল স্তরে গুরুত্বপূর্ণ হলেও যৌবনকালের ইবাদতের মর্যাদা বেশি। কারণ এ সময়ে মানুষের কুরিপু এবং কুপ্রবৃত্তি দমন অন্য বয়সের তুলনায় কষ্টসাধ্য। তাই যৌবনকালে কষ্ট হলেও ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকা।

গ. মুমিনের অবস্থান যেখানেই হোক, যে কাজেই সে লিপ্ত থাকুক তার অন্তর সর্বদা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে এবং মসজিদই হবে তার আত্মার ঠিকানা। এর ফলে মসজিদভিত্তিক সুষম সমাজ গড়ে উঠবে।

ঘ. মুমিনদের পারস্পরিক ভালোবাসা, বিদ্বেষ, হাদিয়া প্রদান, হাদিয়া গ্রহণ, সুসম্পর্ক বজায় রাখা, পারস্পরিক সহযোগিতার হাত বাড়ানো ইত্যাদি সকল কাজ হবে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। এ সব বৈশিষ্ট্য ঈমানের পূর্ণতার লক্ষণ বিশেষ।

ঙ. আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের জন্য নির্জনতা সর্বোত্তম কৌশল এবং মুমিনের চোখের পানি আল্লাহতায়ালার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান ও প্রিয়।

চ. প্রতিকূল পরিবেশে প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নিজের সম্ভ্রম বজায় রাখা ইবাদত বিশেষ।

ছ. নফল দান-খয়রাত করার সময় সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা ও আত্মপ্রচার থেকে নিজেকে দূরে রাখা মুমিন চরিত্রের ভূষণ।




Frequently Asked Questions (FAQ):

উচ্চারণ :   আল্লা-হুম্মা আনতা রববী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুকা ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা। 



এই আমল গুলো যে নিয়মিত করবে আল্লাহ পাক যদি চান  তাহলে দ্রুত সে ধনী হবে, রিজিকে ব্বরকত হবে, তার সম্পদ বৃদ্ধি পাবে অভাব অনটন দূর  হবে ইনশাআল্লাহ্‌  

১. রিজিক বৃদ্ধির দোয়া-  তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করা

২. ধনী হওয়ার দোয়া ও আমল- পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা

৩. অভাব মুক্তির দোয়া-  তওবা ও ইস্তিগফার করা

৪. আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা

৫. রিজিক বাড়ানোর সহজ দোয়া-  বারবার হজ-ওমরাহ করা            





Post a Comment

0 Comments