🪴 ইনডোর প্ল্যান্ট: বাহারি ঘরোয়া গাছে ঘরের দূষণ কমান
লেখক: Md. Zakir Hossain | ব্লগ: Web Tech Info - সব কিছু বাংলায়!
🌱 আপনার ঘরে চাষ করার জন্য সেরা ইনডোর গাছগুলো
🌿 ইনডোর গাছের উপকারিতা
মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে ইনডোর প্ল্যান্ট বা ঘরোয়া গাছের উপকারিতা নিয়ে সংক্ষেপে কিছু জেনে নেওয়া যাক। এই গাছগুলো শুধু কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণই করে না, বরং ঘরের বাতাসে জমে থাকা নানান ক্ষতিকর বাষ্প—যাদের পোশাকি নাম উদ্বায়ী জৈব যৌগ (Volatile Organic Compound)—সেগুলোকেও শুষে নেয়। যেমন: বেনজিন, জাইলিন, অ্যাসিটোন, ফর্ম্যালডিহাইড ইত্যাদি। পাশাপাশি এগুলো প্রচুর অক্সিজেন উৎপন্ন করে ঘরের বাতাসকে পরিশুদ্ধ রাখে। ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, মানসিক প্রশান্তি ও পরিবেশকে আরামদায়ক করতেও ইনডোর গাছ অতুলনীয়। আরো পড়ুন ➤ ইনডোর প্ল্যান্ট: বাহারি ঘরোয়া গাছে ঘরের দূষণ কমান
🌱 ঘরের সৌন্দর্য বদলে দিতে ইনডোর গাছের সেরা ১০ ! ( দশ )
• কলাগাছ (Musa spp.) Banana Tree
কলাগাছ (Musa spp.) – প্রাকৃতিক সমৃদ্ধি ও বহুবিধ উপকারিতার এক অনন্য গাছ ।
কলাগাছ বাংলাদেশের অন্যতম পরিচিত ও উপকারী একটি ফলজ উদ্ভিদ, যা শুধু সুস্বাদু ফলই দেয় না—একই সঙ্গে পরিবেশ ও মানুষের জীবনধারায় বড় ধরনের ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর বড় সবুজ পাতাগুলো ঘরের চারপাশে একধরনের ট্রপিক্যাল লুক তৈরি করে, আর দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় খুব কম যত্নেই ফলন দেওয়া শুরু করে। কলার ফল যেমন শক্তি, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম ও খাদ্যআঁশে ভরপুর, তেমনি কলাগাছের পাতা, কাণ্ড ও মোচা বিভিন্ন রান্নায় ব্যবহৃত হয়। গ্রামের পরিবেশে ঘরের পাশে বা উঁচু জমিতে কলাগাছ রোপণ করলে মাটি ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক ছায়া তৈরি করে। ঘরোয়া বাগান, ছাদবাগান বা হোম গার্ডেনে কলাগাছ এক অনন্য সৌন্দর্য যোগ করে—যা একই সঙ্গে ফলদায়ক, নান্দনিক এবং পরিবেশবান্ধব।
কলার বড় বড় পাতা যে কোনো ঘরে ট্রপিক্যাল অনুভূতি এনে দিতে পারে। উষ্ণ তাপমাত্রা, পর্যাপ্ত সূর্যালোক এবং নিয়মিত সার প্রয়োগ করলে এই গাছ তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারে।
• স্নেক প্ল্যান্ট (Sansevieria trifasciata)
স্নেক প্ল্যান্ট (Sansevieria trifasciata) বা “Mother-in-Law’s Tongue” - একটি অত্যন্ত টেকসই ও কম যত্নে বেড়ে ওঠা ইনডোর প্ল্যান্ট, যা নবীন প্ল্যান্ট-প্রেমীদের জন্যও আদর্শ। এর মোটা, তলোয়ারের মতো সোজা দাঁড়ানো পাতাগুলো ঘরের সাজসজ্জায় আধুনিক সৌন্দর্য যোগ করে। NASA-এর গবেষণা অনুযায়ী স্নেক প্ল্যান্ট রাতেও অক্সিজেন উৎপন্ন করে এবং বেনজিন, ফর্মালডিহাইডসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক দূর করে ঘরের বায়ু পরিশোধনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। কম আলো, কম পানি এবং বিভিন্ন তাপমাত্রায় সহজেই টিকে থাকার ক্ষমতা একে সবচেয়ে “লো-মেইনটেনেন্স” গাছগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে পরিচিত করেছে। তবে অত্যধিক পানি দিলে রুট রট হওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাই মাটি ভালোভাবে শুকানোর পর পানি দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
স্নেক প্ল্যান্ট পরিচর্যা সহজ এবং রাতেও অক্সিজেন উৎপন্ন করে। ঘরের কোনোটিই শুষ্ক না হলে এটি ভালো হয়। স্নেক প্ল্যান্ট বহুবর্ষজীবী এবং অত্যন্ত সহনশীল ইনডোর গাছ। কম আলো, কম পানি এবং যেকোনো পরিবেশে সহজেই টিকে থাকে। বায়ু শোধনে এর কার্যকারিতা অসাধারণ।
• এরিকা পাম (Dypsis lutescens)
এরিকা পাম (Dypsis lutescens) -
পাম জাতীয় চিরসবুজ গাছ। সাধারণত ৩–৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। ঘরের এক কোণ সবুজে ভরিয়ে তুলতে এর কোনো জুড়ি নেই। এরিকা পাম (Dypsis lutescens) বা “Areca Palm” ঘরোয়া সাজসজ্জার জন্য অন্যতম জনপ্রিয় একটি ইনডোর প্ল্যান্ট, যা এর কোমল, পালকের মতো পাতার জন্য পরিচিত।
এটি প্রাকৃতিকভাবে বায়ু বিশুদ্ধকরণে অত্যন্ত কার্যকর এবং ঘরের পরিবেশকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। পরোক্ষ আলো, হালকা স্যাঁতসেঁতে মাটি এবং মাঝারি তাপমাত্রায় এই গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং ঘরের কোণ, বারান্দা বা অফিস—যেকোনো স্থানে আকর্ষণীয় সবুজ আবহ সৃষ্টি করে। নিয়মিত পানি দেওয়া ও শুকনো বাতাস থেকে দূরে রাখা ছাড়া এর বিশেষ কোনো যত্নের প্রয়োজন নেই, যা একে ব্যস্ত মানুষের জন্যও আদর্শ করে তোলে। তবে অতিরিক্ত পানি বা সরাসরি রোদ এর পাতায় হলদে দাগ ফেলতে পারে, তাই সামান্য সতর্ক হওয়াই যথেষ্ট।
• ফিডল লিফ ফিগ (Ficus lyrata)
ফিডল লিফ ফিগ (Ficus lyrata) – ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর রাজকীয় ইনডোর প্ল্যান্ট ।
ফিডল লিফ ফিগ তার বড়, ভায়োলিন আকৃতির পাতার জন্য পরিচিত একটি জনপ্রিয় ইনডোর প্ল্যান্ট, যা যেকোনো ঘরের কর্নারকে মুহূর্তেই আধুনিক ও এলিগেন্ট লুক দেয়। মাঝারি থেকে উজ্জ্বল পরোক্ষ আলোতে এটি দারুন বাড়ে, আর সঠিকভাবে পানি দিলে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকে। এই গাছটি ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং এর উঁচু, সোজা বৃদ্ধির স্টাইল রুমে আকর্ষণীয় ভিজ্যুয়াল স্টেটমেন্ট তৈরি করে। লিভিং রুম, অফিস বা বেডরুম—যেখানেই রাখা হোক না কেন, ফিডল লিফ ফিগ একটি ন্যাচারাল ডেকর পিস হিসেবে ঘরের সৌন্দর্যকে এক ধাপ বাড়িয়ে তোলে।
ঘন পাতার বৈশিষ্ট্যযুক্ত এই ইনডোর গাছটি উজ্জ্বল, পরোক্ষ আলো পছন্দ করে, যেমন পূর্বমুখী জানালার কাছাকাছি। এতে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার জল দেওয়া উচিত।
💼 Freelancing করে ক্যারিয়ার গড়তে চান? তাহলে এই গাইডটাই আপনার প্রথম ধাপ!
ঘরে বসেই আয়, নিজের মতো কাজের স্বাধীনতা—সবকিছুই সম্ভব ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে। কোন স্কিল শিখবেন, কোথা থেকে শুরু করবেন, কিভাবে প্রথম ক্লায়েন্ট পাবেন—স tep-by-step পুরো রোডম্যাপ পাচ্ছেন নীচের বিস্তারিত লেখায়।
👉 এখনই পড়ুন — সফল ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার গাইড• মানি প্ল্যান্ট (Epipremnum aureum)
মানি প্ল্যান্ট (Epipremnum aureum) – সৌভাগ্য, সুস্বাস্থ্য ও ঘর সাজানোর জনপ্রিয় ইনডোর লতা -
মানি প্ল্যান্ট এমন একটি ইনডোর লতা যা খুব কম যত্নেই দ্রুত বাড়ে এবং ঘরের বাতাসকে বিশুদ্ধ করতে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। ফেং শুই মতে এই গাছ ঘরে ইতিবাচক শক্তি, শান্তি ও অর্থনৈতিক উন্নতি নিয়ে আসে—তাই একে “মানি প্ল্যান্ট” বলা হয়। উজ্জ্বল পরোক্ষ আলোতে সবচেয়ে ভালো বাড়লেও অল্প আলোতেও টিকে থাকে, ফলে ফ্ল্যাট, অফিস বা বারান্দার জন্য এটি সহজেই মানিয়ে যায়। ঝুলিয়ে রাখা বা পটের স্ট্যান্ডে সেট করে দিলেই এর লম্বা সবুজ লতাগুলো ঘরে তৈরি করে ন্যাচারাল ডেকরের অপূর্ব ছোঁয়া। সহজ যত্ন, দ্রুত বৃদ্ধি এবং ঘর-বান্ধব স্বভাবের কারণে মানি প্ল্যান্ট আজ ইনডোর প্ল্যান্ট প্রেমীদের অন্যতম পছন্দের তালিকায় আছে।
লতানো চিরসবুজ গাছ। শুধু মাটি নয়, পানিতেও বেড়ে ওঠে। বায়ু পরিশোধনে খুব কার্যকর এবং পরিচর্যার ঝামেলাও একদম কম। মজা করে বলা হয়—বেশি যত্ন নিলে মানি প্ল্যান্ট বাঁচে না!
• অ্যালোভেরা (Aloe Vera)
অ্যালোভেরা (Aloe vera) – সৌন্দর্য, চিকিৎসা ও ইনডোর গাছের রাজা -
অ্যালোভেরা এমন একটি বহুমুখী ইনডোর প্ল্যান্ট যা শুধু ঘরের সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং তার জেল শরীরচর্চা, ত্বক ও চুলের যত্নে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে দারুণ কার্যকর। কম পানি সহ্য করার অসাধারণ ক্ষমতা এবং রোদ–আলোতে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেওয়ার দক্ষতার কারণে এটি নতুন গার্ডেনারদের জন্যও আদর্শ। ঘর, ব্যালকনি বা জানালার পাশে রাখলে অ্যালোভেরা বাতাসকে বিশুদ্ধ করে এবং খুব কম যত্নেই বড় হতে থাকে। সহজে বংশবৃদ্ধি, ন্যূনতম যত্ন এবং স্বাস্থ্য–সৌন্দর্যের অপরিসীম উপকারিতার জন্য অ্যালোভেরা আজ পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় হোম প্ল্যান্ট।
অ্যালোভেরা শুধুমাত্র ঘর শোভা বৃদ্ধি করে না, এটি চুল, ত্বক এবং বাতাসের জন্যও উপকারী। বহুবর্ষজীবী সপুষ্পক গাছ। বায়ু শোধনের পাশাপাশি এর রয়েছে অসাধারণ ঔষধি গুণ। বিশেষ করে ত্বক ও রূপচর্চায় অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকর।
• ক্রোটন (Codiaeum variegatum)
ক্রোটন (Codiaeum variegatum) – রঙিন পাতার আকর্ষণীয় ইনডোর প্ল্যান্ট -
ক্রোটন তার প্রাণবন্ত, রঙিন ও বৈচিত্র্যময় পাতার জন্য পরিচিত একটি জনপ্রিয় ইনডোর গাছ। লাল, কমলা, হলুদ ও সবুজ রঙের মিশ্রণযুক্ত পাতাগুলো যে কোনো ঘর বা অফিস স্পেসকে প্রাণবন্ত ও চোখে পড়ার মতো করে তোলে। ক্রোটন ভালোভাবে বৃদ্ধি পেতে মাঝারি থেকে উজ্জ্বল পরোক্ষ আলো প্রয়োজন এবং নিয়মিত পানি দেওয়ার মাধ্যমে মাটি সবসময় নরম ও স্যাঁতসেঁতে রাখা উচিত। এটি তুলনামূলকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ একটু বেশি চায়, তবে সঠিক যত্নের মাধ্যমে ক্রোটন দীর্ঘদিন ঘরের সৌন্দর্য বজায় রাখতে পারে। এর চোখধাঁধানো রঙিন পাতা ঘরের পরিবেশকে প্রাণবন্ত রাখে এবং এটি ইনডোর প্ল্যান্ট প্রেমীদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়।
গুল্মজাতীয় রঙবাহারি পাতা—এই গাছের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। পাতায় সবুজ, হলুদ, লাল, কমলা, গোলাপি—নানা রঙের নকশা থাকে। ঘর সাজাতে অসাধারণ কার্যকর।
• স্পাইডার প্ল্যান্ট (Chlorophytum comosum)
স্পাইডার প্ল্যান্ট (Chlorophytum comosum) – ঘরের বাতাস বিশুদ্ধকারী এবং সহজ যত্নের ইনডোর লতা -
স্পাইডার প্ল্যান্ট, যাকে “Airplane Plant” বা “Ribbon Plant” নামেও বলা হয়, একটি বহুমুখী ইনডোর লতা যা খুব সহজে বাড়ে এবং ঘরের বাতাসকে বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। এর লম্বা, সবুজ পাতার মাঝ বরাবর সাদা স্ট্রাইপ থাকায় এটি ঘরের লিভিং রুম, অফিস বা বারান্দা—যে কোনো স্থানে সুন্দর ন্যাচারাল ডেকর তৈরি করে। স্পাইডার প্ল্যান্ট কম আলোতেও টিকে থাকে, মাঝারি আলোতে সবচেয়ে ভালো বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত পানি দিলে পাতার নীচের অংশ ভিজে যেতে পারে, তাই পানি দেওয়ার সময় মাটি সামান্য শুকানো রাখা উত্তম। এর দ্রুত বংশবৃদ্ধি এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজনীয়তা এটিকে ইনডোর গাছপ্রেমীদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় করেছে।
স্পাইডার প্ল্যান্ট বাতাস থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত পানি দেওয়া ও আলো ভালো লাগার জায়গায় রাখলে এটি সুস্থ থাকে। ঘাসের মতো লম্বা ডোরাকাটা পাতা। পরিচর্যা কম চাই, দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ঝুলন্ত টবে রাখলে দারুণ শোভা পায়।
• অ্যাগ্লোনিমা (Aglaonema Commutatum)
অ্যাগ্লোনিমা (Aglaonema commutatum) – ইনডোর সৌন্দর্য ও কম আলোতে টিকে থাকা গাছ -
অ্যাগ্লোনিমা, যাকে “Chinese Evergreen” নামেও ডাকা হয়, একটি জনপ্রিয় ইনডোর প্ল্যান্ট যা কম আলোতেও টিকে থাকে এবং ঘরের পরিবেশকে শান্তিপূর্ণ ও সতেজ রাখে। এর মোটা, সবুজ এবং মাঝে মাঝে রঙিন পাতাগুলো ঘরে আধুনিক এবং ন্যাচারাল লুক যোগ করে। সহজ যত্ন, কম পানি এবং ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এটি নবীন প্ল্যান্ট প্রেমীদের জন্য আদর্শ। এটি ঘরের বাতাসকে বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে এবং অফিস, লিভিং রুম বা বেডরুম—যে কোনো স্থানে রাখলেও সুন্দর ন্যাচারাল ডেকর তৈরি করে। তবে, অত্যধিক পানি দিলে রুট রট হতে পারে, তাই মাটি সামান্য শুকানোর পর পানি দেওয়াই ভালো।
কষ্টসহিষ্ণু ইনডোর গাছ। দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে। পাতায় সাদা, লাল বা রুপালি নকশা—দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
• পিসলিলি (Spathiphyllum)
চিরসবুজ সপুষ্পক গাছ। সাদা শান্তিময় ফুলের জন্য জনপ্রিয়। কম আলো ও কম পানিতেই ভালোভাবে বেড়ে ওঠে।
টিপস: ইনডোর গাছের যত্ন
প্রচুর সূর্যালোক কিন্তু সরাসরি না।
মাটিতে মাঝেমধ্যেই সার প্রয়োগ।
মাটি শুকালে পানি দেওয়া।
ধুলো পরিষ্কার রাখা।
ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করতে সহায়ক আরও যেসব ইনডোর গাছ আপনি সহজেই পেতে পারেন !
🍃 মানি ট্রি (Pachira aquatica)
মানি ট্রি সাধারণত জলাভূমি বা স্যাঁতসেঁতে অঞ্চলে ভালোভাবে জন্মায়—যেমন তার মূল আবাস দক্ষিণ আমেরিকার ওয়েটল্যান্ডস। তাই গাছটি পানি সহ্য করতে পারে, এমনকি মাঝে মাঝে বেশি পানি পেলেও সমস্যা নেই—শুধু টবের ড্রেনেজ ভালো হতে হবে। এছাড়া মানি ট্রি উজ্জ্বল কিন্তু পরোক্ষ আলো পছন্দ করে। সঠিক আলো এবং সঠিক ড্রেনেজ থাকলে এটি ঘরের ভেতরে খুব দ্রুত ও সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে।
🌿 আমব্রেলা ট্রি (Umbrella Tree – Schefflera spp.)
অল্প যত্নেই ভালোভাবে বেড়ে ওঠে বলে আমব্রেলা ট্রি এমন ঘরের জন্য দারুণ উপযোগী যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো কম আসে। তবে সতর্ক থাকতে হবে—এই গাছটি মাইটস ও স্কেল পোকামাকড়ের আক্রমণে সহজেই আক্রান্ত হতে পারে। তাই নিয়মিত পাতাগুলো দেখে নিন এবং প্রয়োজন হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
🌿 রাবার ট্রি (Rubber Tree – Ficus elastica)
ভারতীয় উৎসের এই গাছটি বড়, চকচকে সবুজ পাতা উত্পাদন করে, যা হালকা রঙের দেয়ালের সঙ্গে খুব সুন্দর দেখায়। এটিকে এমন স্থানে রাখুন যেখানে পর্যাপ্ত, কিন্তু সরাসরি নয় এমন আলো পৌঁছায়। পানি দিন সপ্তাহে প্রায় একবার।
- 🔴 আলো: উজ্জ্বল কিন্তু পরোক্ষ আলো সবচেয়ে ভালো। সরাসরি রোদ পাতা পোড়াতে পারে।
- 🔴 পানি: মাটি ৫০–৬০% শুকালে পানি দিতে হবে; অতিরিক্ত পানি দিলে রুট রট হতে পারে।
- 🔴 তাপমাত্রা: 18–27°C আদর্শ। ঠান্ডা বাতাস পছন্দ করে না।।
- 🔴 মাটি: পানি নিষ্কাশন ভালো এমন মাটি (well-draining soil)।
- 🔴 সার: মাসে ১ বার লিকুইড ফার্টিলাইজার দিলে ভালো বৃদ্ধি পায়।
💡 উইপিং ফিগ (Weeping Fig – Ficus benjamina)
① কুমকোয়াট (Citrus japonica) 🌿🍊
ফলদায়ক সম্ভাবনা রাখায়, এই গাছটি যতটা সম্ভব সূর্যালোক পেতে চায়। যদি জানালা পর্যাপ্ত আলো না দেয়, তবে অতিরিক্ত grow light ব্যবহার করা যেতে পারে। গাছটি ভিজে মাটিতে দীর্ঘ সময় থাকতে পারে না, তাই অতিরিক্ত জল দেওয়া এড়াতে হবে।
② Dragon Tree (Dracaena marginata)
Dragon Tree (Dracaena marginata) একটি জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় ইনডোর প্ল্যান্ট, যা তার লম্বা সরু কান্ড এবং সরু, লালচে-ধারযুক্ত সবুজ পাতা দিয়ে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়। কম আলোতে টিকে থাকার ক্ষমতা এবং অল্প যত্নেই ভালোভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এটি নবীন প্ল্যান্ট-লাভারদের জন্যও আদর্শ। এই গাছ বাতাস থেকে ফর্মালডিহাইড, বেনজিনসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক দূর করে ঘরের বায়ু বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। সাধারণত এটি ধীরগতিতে বাড়ে এবং ৬–৮ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পরোক্ষ আলো, মধ্যম পরিমাণ পানি, এবং well-draining মাটিতে Dragon Tree সবচেয়ে ভালো বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি এটি কম রক্ষণাবেক্ষণ ও দীর্ঘস্থায়িত্বের কারণে অফিস, ড্রয়িংরুম বা বেডরুম—যে কোনো জায়গায় রাখা যায়। তবে পোষা প্রাণীর জন্য কিছুটা বিষাক্ত হওয়ায় সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
③ 🌿 Mass Cane (Dracaena massangeana): সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
Mass Cane, যা “Corn Plant” নামেও পরিচিত, একটি জনপ্রিয় ইনডোর প্ল্যান্ট। এর পাতাগুলোর মাঝ বরাবর হলুদ-সবুজ ডোরা থাকে এবং এটি ঘরের বায়ু পরিশোধনেও দক্ষ। কম আলো, কম পানি এবং কম যত্নেও ভালোভাবে বেঁচে থাকায় এটি অনেকের প্রিয় ঘরোয়া উদ্ভিদ।
ঘরের ভেতরে গাছপালা রাখা আজকাল শুধু শখ নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে পরিবেশবান্ধব জীবনযাত্রার অংশ। গাছ শুধু ঘরের সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং বায়ু পরিশোধন
- 🌱 যত্ন (Care) নির্দেশনা
- 🔸 আলো (Light) — মাঝারি থেকে উজ্জ্বল পরোক্ষ আলো সবচেয়ে ভালো; খুব কম আলোতেও টিকে থাকে, তবে বৃদ্ধি ধীর হয়; সরাসরি রোদ পাতা পুড়িয়ে দিতে পারে।
- 🔸 পানি (Water) — মাটি ৫০% শুকালে পানি দিন; অতিরিক্ত পানি দিলে রুট রট হতে পারে; ফিল্টার করা বা ২৪ ঘণ্টা রেখে দেওয়া পানি দিলে পাতা টিপ ব্রাউন হওয়ার সম্ভাবনা কমে।
- 🔸 তাপমাত্রা (Temperature) — ১৮–২৭°C আদর্শ; অতিরিক্ত ঠান্ডা বাতাস বা খুব কম তাপমাত্রা গাছে ক্ষতি করে।
- 🔸 মাটি (Soil) — পানি দ্রুত নিষ্কাশন হয় এমন well-draining potting mix (peat + perlite) সবচেয়ে ভালো।
- 🔸 সার (Fertilizer) — মাসে ১ বার হালকা লিকুইড ফার্টিলাইজার দিন (growing season এ); শীতে সার না দিলেও সমস্যা নেই।
🌿 ঘরের ভেতর চাষের জন্য এই গাছ কোথায় পাওয়া যায় (বাংলাদেশে)
এটি একটি বড় অনলাইন নার্সারি যেখানে Indoor গাছ, গড়া গাছ, ট্রি ইত্যাদি পাওয়া যায়।
ঠিকানা: 75/12, North Rajashon, Savar, Dhaka
ফোন এবং যোগাযোগ: +88 09638293325
Brikkho Haat (Chitra Branch)
গাছ বিক্রি + সার্ভিস সহকারে পুরোনো ও নতুন গাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে Indoor গাছগুলো ভালো কালেকশন থাকে। Chitra Brikkho Haat
jPlant (jplant.shop)
একটি অনলাইন প্ল্যান্ট শপ যা দেশব্যাপী ডেলিভারি করে। Indoor গাছ, বонсাই, গার্ডেন অ্যাকসেসরিজ তারা রাখে।
jplant.shop
Satvai Nursery একটি পরিচিত নার্সারি, যেখানে Indoor Plant, ফলগাছ এবং অন্যান্য গাছগুলো পাওয়া যায়। SATVAI.COM
টিপস: ইনডোর গাছের যত্ন
প্রচুর সূর্যালোক কিন্তু সরাসরি না।
মাটিতে মাঝেমধ্যেই সার প্রয়োগ।
মাটি শুকালে পানি দেওয়া।
ধুলো পরিষ্কার রাখা।
⚠️ সাবধানতা
বেশিরভাগ ইনডোর গাছ দেখতে অসাধারণ হলেও পাতা বা কান্ড ভুল করে খেলে সমস্যা হতে পারে। তাই ছোট বাচ্চা বা পোষা প্রাণীর নাগালের বাইরে রাখুন।
🌿 শেষ কথা
যেকোনো স্থানীয় নার্সারি থেকে অথবা অনলাইনে সহজেই ইনডোর গাছ কিনতে পারেন।
তবে কেনার আগে গাছের স্বাস্থ্য, পাতা, মূল—সবকিছু যাচাই করা জরুরি।
[ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত]
💡 চূড়ান্ত কথা:
সঠিক ইনডোর গাছ নির্বাচন করার পর তার যথাযথ যত্ন নেওয়াটাও অত্যন্ত জরুরি। গাছের ভাল বৃদ্ধির জন্য প্রথমে আলো ও পানি দেয়ার সঠিক মাত্রা নির্ধারণ করতে হয়। প্রতিটি গাছের নিজস্ব রকমের যত্নের প্রয়োজন হয় তাই গাছ কেনার আগে তার চাহিদা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া উচিত। অধিকাংশ ইনডোর গাছ কম আলোতেই টিকে থাকে তবে কিছু গাছের জন্য নিয়মিত সূর্যালোকের প্রয়োজন হয়। গাছের অবস্থান নির্বাচন করার সময় অবশ্যই এমন জায়গা বেছে নিতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো আসে।
[ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত]










0 Comments