Visit Youtube Visit Our Youtube Channel!
Latest Post:👉
Loading......Wait...... Please..........

সন্তান গড়ার কার্যকরী কৌশল | আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল-১ | Sontan Gorar Kowshol

সন্তান গড়ার কার্যকরী কৌশল | আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল-১ | Sontan Gorar Kowshol

আদর্শবান শিশু গড়ার উপায় ও কৌশল

আদর্শবান শিশু গড়ার উপায় ও কৌশল

রা   বলেছিলাম বর্তমান যুগে নতুন নতুন গণমাধ্যম ছাড়া আমাদের অবসর সময়গুলো কাটানো সম্ভব হচ্ছে না এবং এক্ষেত্রে টেলিভিশন, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের রয়েছে বিশেষ অবস্থান।

একটা সময় ছিল যখন শিশু-কিশোররা মাটি বা অন্য কোনো আঠালো কিছু মাধ্যম ব্যবহার করে নানা ধরনের খেলনা বা পুতুল ইত্যাদি বানিয়ে তাদের সৃষ্টিশীল দক্ষতা বৃদ্ধির চর্চা করত। এখন এর জায়গা করে নিয়েছে নানা ধরনের মোবাইল বা ট্যাবলেট-এর মাধ্যমে দৃশ্যমান নানা ধরনের কম্পিউটার গেম ।

স্যাটেলাইট টেলিভিশন, ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার গেমস থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকার বর্তমান যুগে এটি প্রায় অসম্ভব। বিশেষত গত কয়েক বছরে, কম্পিউটার গেমের গ্রাহকরা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনোদন হিসাবে, এই গেমগুলি সর্বাধিক দর্শক-বিনোদন নিয়েছে। ফলস্বরূপ, রেসিং ক্রীড়া এবং শরীরের অনুশীলনগুলি বর্তমান যুগের শিশু এবং কিশোর -কিশোরীদের গুরুত্ব হারিয়েছে।

➤ আরো খবর

বা অভিভাবকরাও শিশু-কিশোরদের স্মার্ট ফোন বা ট্যাবলেট কিনে দিতে বাধ্য হচ্ছেন এইসব নতুন খেলার আনন্দ উপভোগের ও দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দিতে।  এ যুগের শিশু-কিশোররা এখন দৌড়-ঝাঁপ বা শরীর-চর্চা কিংবা হস্তশিল্প নির্মাণ-ভিত্তিক খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখায় না।  বরং কম্পিউটার বা ভিডিও-গেমের দিকেই তাদের আগ্রহ বেশি। ফলে গত চার দশকেরও কম সময়ের মধ্যে ভিডিও-গেম নির্মাণ এখন বড় ধরনের বৈশ্বিক লাভজনক ব্যবসার মাধ্যম হয়ে পড়েছে।


কম্পিউটার বা ভিডিও-গেমের ব্যাপক জনপ্রিয়তার ক'টি কারণ হল: এসবে রয়েছে খেলার নানা ধরনের নিয়মের মধ্যে ইচ্ছামত বিভিন্ন নিয়ম বেছে নেয়ার ব্যবস্থা ও এইসব নিয়মের ব্যাখ্যাগুলো বোঝার ব্যবস্থা, কাল্পনিক বীর নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ ও এমনকি নায়কের সক্ষমতার পরীক্ষায় নম্বর দেয়ারও ব্যবস্থার মত আকর্ষণীয় নানা দিক!


কম্পিউটার-ভিত্তিক এইসব গেম শিশু-কিশোরদের নানা ধরনের জ্ঞান দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে তারা ধর্ম, সমাজ, সংস্কৃতিসহ অন্য অনেক বিষয়ে বিশেষ চিন্তাধারা ও তথ্যের মুখোমুখি হচ্ছে। অন্য কথায় শিশুদের মন-মগজকে বিশেষ কিছু দিকে অথবা মতবাদে আকৃষ্ট করার বা মগজ ধোলাই করার ব্যবস্থাও রয়েছে এইসব ভিডিও গেমে।

তবে, এই গেমগুলির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি শিশু ও কিশোরদের স্বাভাবিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রিনের সামনে বসে থাকা চোখ, মস্তিষ্ক ও শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি, অনেক গেমেই সহিংসতা, প্রতিশোধপরায়ণতা এবং অশ্লীল উপাদান থাকে, যা কিশোর মনের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এতে করে তারা বাস্তব জগতের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যেতে পারে।

আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, কিছু ভিডিও গেম রাজনৈতিক মতবাদ, ধর্মীয় চরমপন্থা বা জাতিগত ঘৃণা প্রচারের হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এই গেমগুলোর মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে অজান্তেই বিভ্রান্তিকর ধারণা ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে তাদের চিন্তাধারাকে চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিতে পারে।

এছাড়া, যখন কোনো শিশু বা কিশোর দিনের অধিকাংশ সময় ভার্চুয়াল দুনিয়ায় কাটায়, তখন তাদের সামাজিক দক্ষতা, বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়।

অভিভাবক ও শিক্ষকদের উচিত শিশুদের ভিডিও গেম ব্যবহারে সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া এবং তাদের উৎসাহিত করা বাস্তবভিত্তিক শারীরিক, সৃজনশীল ও দলগত কার্যক্রমে অংশগ্রহণে। এই যুগে প্রযুক্তির গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না, তবে এর সঠিক ও ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।





এটা ঠিক যে অপরাজনৈতিক নানা লক্ষ্যসহ ভিডিও গেম-মাধ্যমকে যেমন নানা অশুভ লক্ষ্যে ব্যবহার করা যায় তেমনি নানা শুভ লক্ষ্যেও এই মাধ্যমকে ব্যবহার করা সম্ভব।  এই মাধ্যম  চিত্রাঙ্কনসহ গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও অন্য অনেক কিছু শেখানোর এক ভালো মাধ্যমও বটে। এমনকি ভিডিও গেমের মাধ্যমে নানা রোগের চিকিৎসারও সহায়তা হতে পারে এবং এই মাধ্যম বিনোদনেরও এক উৎকৃষ্ট মাধ্যম।


কিন্তু ভিডিও গেম বা কম্পিউটার গেমের নানা ক্ষতিকর দিকের কথাও ভুলে যাওয়া ঠিক হবে না। যেমন, এইসব গেম শিশুদের শরীর ও মনের জন্য নানা ধরনের ক্ষতি বয়ে আনে। ভিডিও গেমের আসক্তি শিশুদের কল্পনা-প্রিয়, অবাস্তবতাবাদী, ঘরকুনো, একাকীত্ব-প্রিয়, আত্মকেন্দ্রিক ও অসামাজিকও করে তুলতে পারে। যারা খুব বেশি এ ধরনের খেলায় মেতে থাকে তারা বাস্তবতার জগত সম্পর্কে এবং পারিপার্শ্বিক সমাজ  সম্পর্কেও অসচেতন হয়ে পড়ে এবং এসব বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের গুরুত্বও তারা অনুভব করে না। শারীরিক দিক থেকেও মুটিয়ে পড়ে নানা ধরনের রোগের শিকার হয় এ ধরনের খেলায় আসক্ত শিশু-কিশোররা।

ভিডিও-গেম নির্মাতারা শিশু-কিশোরদেরকে দুঃসাহসিক অভিযানের মজা দিতে এইসব খেলার মধ্যে সহিংসতা ও বিচিত্র ধরনের অস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার করছেন। ফলে শিশু-কিশোররা এইসব গেমের প্রভাবে হয়ে উঠছে সহিংস ও হিংস্র। বারবার সহিংসতার ও নিষ্ঠুরতার দৃশ্য দেখতে দেখতে শিশু-কিশোরদের অনেকেরই মনে এসব বিষয় স্বাভাবিক হয়ে পড়ে। ভিডিও গেমের ভেতরে তারা বহু মানুষকে হত্যার ভার্চুয়াল অভিজ্ঞতা অর্জন করে।

কোনো কোনো ভিডিও-গেম এমনই যে সেখানে যত বেশি হত্যাযজ্ঞ করা যায় ততই বেশি পয়েন্ট পেয়ে বিজয়ের দিকে এগিয়ে যায় খেলোয়াড়! সহিংসতার দৃশ্য দেখতে দেখতে শিশু কিশোররা মনে করে সহিংসতাই নানা সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে ভালো পন্থা! ফলে এই শিশু কিশোররাই বড় হয়ে যদি নানা অপরাধ ও সহিংস অপকর্মের দিকে ঝুঁকে পড়ে ভিডিও গেমের সুদূরপ্রসারী প্রভাবে তাহলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাঝে মধ্যে যেসব সশস্ত্র হামলা ও হত্যাযজ্ঞ হয়ে থাকে সেসব গণমাধ্যমের সহিংস দৃশ্যেরই, বিশেষ করে ভিডিও গেমগুলোর সহিংস দৃশ্যগুলোর অন্যতম প্রভাব।

শিল্প-বিপ্লবোত্তর যুগে নানা ধরনের প্রযুক্তি ও মাধ্যম পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা বাড়িয়ে দিয়েছে। সন্তানরা এখন ভিডিও গেম, ইন্টারনেট ও এ জাতীয় নানা বিষয়ে মশগুল হয়ে বাবা মায়ের সঙ্গে অতীতের তুলনায় কম যোগাযোগ রাখছে! ফলে দুর্বল হয়ে পড়ছে পারিবারিক বন্ধন।


আদর্শ সন্তান গড়ার মনস্তত্ত্ব: সফল পিতামাতার গাইড

তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাবা-মা ও অভিভাবকদের উচিত শিশু-কিশোররা যে ধরনের খেলাধুলাতেই মশগুল থাকুক না কেন তারাও যেন অল্প সময়ের জন্য হলেও তাদের সেই সময়কার সঙ্গী হন। ভিডিও গেম একসঙ্গে দেখতে গিয়ে তারা যেন এসব গেমের নানা দোষত্রুটিও তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে মত বিনিময় করেন শিশু-কিশোর সন্তানদের সঙ্গে। প্রয়োজনে এইসব গেইমের ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে বাবা মা ও অভিভাবককে।


অতীতের খেলাধুলায় যেমন শিশ-কিশোরদের শরীর চর্চাও হয়ে যেত এবং পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্ব জোরদার হত বর্তমান যুগের ভিডিও গেইম বা কম্পিউটার গেইম ঠিক এর বিপরীত। এখন শিশু ও কিশোররা একা একাই খেলে ট্যাবলেট, মোবাইল বা ল্যাপটপে। ফলে এ ধরনের শিশু-কিশোররা হয়ে উঠতে পারে হতাশাবাদী। ভিডিও প্রযুক্তির এ ধরনের খেলায় পারস্পরিক যোগাযোগ ও  সামনাসামনি দেখার ব্যবস্থা না থাকায়  তাদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্কের চেতনাও গড়ে উঠতে পারে না।


সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ভাইরাস দেখা দেওয়ায় ও স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরাসরি খোলা না থাকায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে ভিডিও গেইমের আসক্তি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।  তাই তাদের ওপর অভিভাবকদের নজরদারি জোরদার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।





✅ আশা করি,
এরকম আরও গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমাদের



follow
দিয়ে রাখুন । অথবা হোম পেজটি বুকমার্ক করে রাখতে পারেন ।

👉 Post a Comment 💬 এখানে লিখে আপনার মতামত দিতে পারেন, আমরা শুনতে আগ্রহী!

0 Comments