পারিবারিক বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল করার নিয়ম
পরিবারে একাধিক সদস্য যদি যৌথভাবে জমির মালিক হন, তবে ভবিষ্যতে বিরোধ এড়াতে জমি সঠিকভাবে ভাগ করে নেওয়া খুব জরুরি। একে বলা হয় পারিবারিক বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল। অনেক সময় এটাকে আপোষ বন্টননামা বলেও উল্লেখ করা হয়।
বন্টননামা দলিল করার উদ্দেশ্য
- পরিবারের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে বিরোধ এড়ানো।
- প্রত্যেক উত্তরাধিকারীর অংশ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা।
- ভবিষ্যতে জমি ক্রয়-বিক্রয়ে আইনি জটিলতা থেকে বাঁচা।
পারিবারিক বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যা পরিবারে জমি বা সম্পত্তি ভাগাভাগি সংক্রান্ত বিরোধ এড়াতে সাহায্য করে। এটি করার সময় প্রয়োজন হয় সঠিক কাগজপত্র, ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং সম্ভাব্য খরচ সম্পর্কে সচেতন থাকা। প্রতিটি অংশীদারের স্বাক্ষর এবং আইনি রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
বন্টননামা দলিল করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- সকল অংশীদারের জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) / জন্ম নিবন্ধন।
- মূল দলিল, খতিয়ান, পর্চা ও দাখিলা।
- জমির পরিমাণ ও অংশ নির্ধারণ করে হাতে আঁকা নকশা।
- সকল অংশীদারের সম্মতি (স্বাক্ষরিত লিখিত কপি)।
- ২ জন সাক্ষীর উপস্থিতি।
বন্টননামা দলিল করার নিয়ম
➤ ধাপ ১: পরিবারে যেসব সদস্যের নামে জমি আছে, সবার মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে ভাগাভাগি চূড়ান্ত করতে হবে।
➤ ধাপ ২: জমির পরিমাণ, অংশীদারদের নাম ও তাদের প্রাপ্য অংশ লিখে খসড়া বন্টননামা তৈরি করতে হবে।
➤ ধাপ ৩: নোটারি পাবলিক বা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে গিয়ে বন্টননামা দলিল নিবন্ধন করতে হবে।
➤ ধাপ ৪: সকল অংশীদার ও সাক্ষীর স্বাক্ষর গ্রহণ করতে হবে।
➤ ধাপ ৫: দলিল নিবন্ধন শেষে জমির খতিয়ান সংশোধনের জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করতে হবে।
আপোষ বন্টননামা কী?
যদি পরিবারে জমি বণ্টন নিয়ে বিরোধ বা মামলা চলমান থাকে, তবে আদালতের বাইরে পারিবারিকভাবে আপোষের মাধ্যমে সমাধান করলে সেটিকে আপোষ বন্টননামা বলা হয়। এটি বৈধভাবে দলিল আকারে নিবন্ধন করলে ভবিষ্যতে আইনি স্বীকৃতি পায়।
সতর্কতা
- সব অংশীদারের লিখিত সম্মতি নিশ্চিত করতে হবে।
- দলিল অবশ্যই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রি করতে হবে।
- কোনো তথ্য গোপন করলে ভবিষ্যতে মামলা হতে পারে।
📌 তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ রেজিস্ট্রেশন আইন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকা
0 Comments